বক্তৃতা দানের গুরুত্বঃ

লেখক ফাহিম 

বক্তৃতা মানুষের জীবনে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব বিস্তার করে। অতীতে যারা বিভিন্ন আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন তাদের বক্তৃতা শুনেই মানুষ উজ্জীবিত হয়েছে, জীবন বিলিয়ে দিয়েছে। আল্লাহর জমিনে আল্লাহর দ্বীন কায়েম করতে হলেও সাধারণ মানুষের মন মননে নাড়া দিতে হবে,তাদের জাগিয়ে তুলতে হবে ।মানুষের মধ্যে সারা জাগানোর জন্য উত্তমভাবে দিনের কথা পেশ করা উচিত।আদর্শের সাথে সাধারণ মানুষকে সম্পৃক্ত করার ক্ষেত্রে উক্ত আদর্শ প্রচারকদের মানুষের মনকে কতটুকু নাড়া দিতে পারে তা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সাধারণ মানুষ তাত্ত্বিক বই পড়ে আন্দোলনে সম্পৃক্ত হয় না তারা আদর্শ প্রচারকদের কথা শুনে আদর্শের প্রতি আকৃষ্ট হয়। বক্তৃতা দানের কৌশল





আল্লাহ আল্লাহ সকলকে বক্তৃতা দানের সমান যোগ্যতা দান করেননিঃ

 বক্তৃতার যোগ্যতা সকলকে সমানভাবে দান করেননি ।কেউ সাধারণ একটি কথাও অল্প কথায় মিষ্টি ভাষায় সুন্দর ব্যবস্থা করতে পারেন আর কেউ অতি গুরুত্বপূর্ণ কথা বলতে গিয়ে জরতাগ্রস্ত হয়ে পড়েন।নবী রাসূলদের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায় সকল নবীকে একই দিনের দাওয়াত দেওয়ার দায়িত্ব দুনিয়ার পাঠানোর পরও সকলের বক্তৃতা রাখার যোগ্যতা এক ধরনের ছিল না।হযরত দাউদ আলাইওয়াসাল্লামের মুখের জরতার কারণে আল্লাহতালা তার সহযোগী করেন নবী হারুন আলাইওয়াসাল্লাম কে ।বক্তৃতা দানের কৌশল

মুসা আলাই সাল্লাম তার জিহ্বার জরতা দূর করার জন্য আল্লাহর কাছে সাহায্য চেয়েছিলেনঃ

  • رَبِّ اشْرَحْ لِيْ صَدْرِيْ
  • وَيَسِّرْ لِيْ أَمْرِيْ
  • وَاحْلُلْ عُقْدَةً مِّنْ لِّسَانِيْ
  • يَفْقَهُوْا قَوْلِيْ


 "আমার রব আমার বক্ষ প্রসারিত করে দিন ,আমার কাজগুলো সহজ করে দি্‌ এবং আমার জিব্বার জরতা দূর করে দিন, যাতে তারা আমার কথা বুঝতে পারে।

কোরআনে উল্লেখিত হযরত মুসা আঃ এর দোয়া থেকে বোঝা যায় উত্তমভাবে দিনের কথা তুলে ধরার জন্য বক্তৃতা দেয়ার চেষ্টা করা ভালো গুণ। বক্তৃতা দানের কৌশল

কোরআন ও হাদিসের আলোকে বক্তৃতা দানের কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ঃ

 সালাম বিনিময়ঃ বক্তৃতা শুরুর আগে সালাম বিনিময় এর মাধ্যমে শ্রোতাদের সাথে বক্তার ভাবের বিনিময় হয়ে যেতে পারে ।হাদিস অনুযায়ী কারো সাথে কথা বলা শুরুর আগে সালাম বিনিময় হওয়া সুন্নত।

আবেগময়ী ভাষায় সংক্ষিপ্ত বক্তৃতা দেওয়াঃ

 বক্তৃতা বেশি দীর্ঘ করার চেয়ে সংক্ষিপ্ত ও অর্থবহ করা দরকার। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খুব সংক্ষিপ্ত অথচ পূর্ণাঙ্গ বক্তৃতা পেশ করতেন। যার বক্তৃতা হত অতিশয় উদ্দীপনা দানকারী যা শ্রোতাদের মনে আবেগ সঞ্চার করতো ফলে সাহাবায়ে কেরাম ত্যাগও কুরবানীর জন্য উজ্জীবিত হতেন।বক্তৃতা দানের কৌশল

 শ্রোতাদের মনোযোগের প্রতি খেয়াল রেখে বক্তৃতা দেওয়া উচিতঃ 

এ প্রসঙ্গে আলী রাদিয়াল্লাহ বলেন "মানুষের মনের কিছু কামনা-বাসনা থাকে আর কোন কোন সময় তার কথা শুনতে প্রস্তুত থাকে আর কোন কোন সময় তা কথা শুনতে প্রস্তুত থাকে না তোমরা মানুষের মনের সেসব আগ্রহ ও যুগ প্রবণতার ভেতর দিয়ে প্রবেশ করো। এবং তখনই তোমরা কথা বলো যখন সে শোনার জন্য প্রস্তুত থাকে। কারণ মনের অবস্থা ভালো হলো যখন তার উপর জোর করা হয় তখন সে অন্ধ হয়ে যা।বক্তৃতা দানের কৌশল

শ্রোতাদের বয়স ও যোগ্যতার দিকে লক্ষ্য রেখে কথা বলাঃ যোগ্যতার প্রতি লক্ষ্য রেখে কথা বলা উচিত এ কারণে রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন মানুষের সাথে তাদের বুদ্ধি অনুপাতে কথা বল ।

বক্তৃতা শ্রোতারা বিরক্ত হবে ভাবলে বক্তৃতা না দেওয়াঃ

 বক্তৃতা শোনার প্রতি আগ্রহ না থাকলে বক্তৃতা দেওয়া উচিত নয়।হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসুদ (রা)প্রত্যেক বৃহস্পতিবার ওয়াজ নসিহত করতেন। জৈনক ব্যক্তি তাকে বললেন "হে আবু আব্দুর রহমান আপনি প্রতিদিন এই ওয়াজ নসিহত করেন। আমি এটা চাই।" তিনি বললেন আমি প্রতিদিন ওয়াজ নসিহত করা অপছন্দ করি ।

প্রাঞ্জল ভাষায় কথা বলা, কঠিন শব্দ প্রয়োগ না করাঃ শ্রোতাদের বোধগম্য ভাষায় কথা বলা এবং কঠিন শব্দ পরিহার করা উচিত ।কেউ কেউ মনে করেন খুব কঠিন শব্দ প্রয়োগ করে বক্তৃতা সুন্দর হয়। বিষয়টি তা নয় ,শ্রোতারা কোন কথা বুঝতে অপারগ হলে বক্তৃতা শোনার আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন "সহজ করে দাও ,কঠিন করে দিও না। সুখবর শোনাও বিদ্বেষ ও ঘৃণার ভাব সৃষ্টি করো না ।এই হাদিসের আলোকে বুঝা যায় মানুষের সামনে সহজ ভাষায় আলোচনা পেশ করা উত্তম।বক্তৃতা দানের কৌশল

মূল পয়েন্ট পূর্ণ বার বার বলাঃ 

বক্তৃতা দেওয়ার সময় অনেক কথা বলেন এর মধ্যে কিছু মূল পয়েন্ট থাকে ।আর মূল পয়েন্ট পুনরায় ব্যক্ত করা ভালো, রাসুল মূল কথা মাঝে মাঝে তিনবার উচ্চারণ করতেন যাতে শ্রোতারা ভালো করে বুঝতে পারে।

উদাহরণ দেওয়াঃ 

শুধু তথ্য কথা বেশিক্ষণ শুনতে ভালো লাগে না।এই কারণে বক্তব্যের মাঝে মধ্যে কিছু উদাহরণ দেয়া ভালো। উদাহরণ দীর্ঘ সময় পর্যন্ত মানুষের মনে রেখাপাত করে।উদাহরণ থেকে মানুষ সহজে শিক্ষা নিতে পারে আমরা মহান আল কোরআনের অধ্যায়ন করার সময় দেখতে পাই যে আল্লাহতালা কোরআনের বিভিন্ন জায়গায় উদাহরণ দিয়ে অনেক কথা বলেছ। আল্লাহর রাসূল সাহাবীদেরকে নসিহত পেশ করার সময় উদাহরণ কাহিনী ঘটনা দৃষ্টান্তের মাধ্যমে বক্তৃতা বুঝাতেন।বক্তৃতা দানের কৌশল

শ্রোতাদের অংশীদার করাঃ

 আলোচনায় শ্রোতাদের মাঝে অংশীদার বানানোর দরকার এতে তাদের মধ্যে মনোযোগ বেশি থাকে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিভিন্ন ধরনের প্রশ্ন করতেন বক্তব্য দেওয়ার সময়। বিদায় হজের ভাষণে উপস্থিত শ্রোতাদের উদ্দেশ্য করে  প্রশ্ন করেছেনঃ আমি কি দিনের দাওয়াত সঠিকভাবে পৌঁছিয়েছি? সকলে জবাব দিয়েছেন, হ্যাঁ। আপনি যথাযথভাবে দাওয়াত ও তাবলীগের কাজ করেছেন।বক্তৃতা দানের কৌশল

এরকম আরো ৩০ থেকে ৪০টি টপিক নিয়ে আমরা বক্তৃতা দানের কৌশল সম্পর্কে আলোচনা করব যা পরবর্তী আপডেট পোস্টে আপনারা পেয়ে যাবেন।বক্তৃতা দানের কৌশল

আশা করি আপনারা সকলেই আমাদের ওয়েবসাইটের সাথে থাকবেন এবং নিজের ক্যারিয়ারকে সাজাবেন সুন্দর এবং সাবলীলভাবে।বক্তৃতা দানের কৌশল

বক্তৃতা দানের কৌশল

বক্তৃতা দানের কৌশল

বক্তৃতা দানের কৌশল




2 মন্তব্যসমূহ

আসসালামু আলাইকুম
আপনাদের সকলকে আমাদের রাইটার ফারুকী ওয়েবসাইটের পক্ষ থেকে আন্তরিক মোবারকবাদ ও শুভেচ্ছা ।আমরা বর্তমান আধুনিকতা নামক অশ্লীলতা এবং বেহায়াপনার বিরুদ্ধে ইসলামের পক্ষে কাজ করার সুদূর প্রসারীর চিন্তা ভাবনা এবং অপরিকল্পনা গ্রহণ করেছি ।সাহিত্য চর্চার মাধ্যমে ইসলামের সৌন্দর্যকে মানুষের কাছে ফুটিয়ে তোলা এবং ইসলামের শ্রেষ্ঠত্ব মহত্ব মানব মনে স্থাপন করে দুর্নীতি এবং অপরাধমুক্ত সমাজ গড়ার স্বপ্ন দেখি আমরা ।আমরা বিশ্বাস করি খোলাফায়ে রাশেদিনের চেতনার অনুরূপ চরম এবং তীব্র দায়িত্ব অনুভূতি জাগ্রত করার মাধ্যমে সমাজের নেতৃত্বে যোগ্য ব্যক্তিদের পদার্প সম্ভব। আমরা চাই তোমাদের মত যুব সমাজ আগামী দিনে দেশকে নেতৃত্ব দিয়ে ইসলামের সুমহান বাণীকে পৃথিবীবাসীর কাছে পৌঁছে দেবে। আমাদের সহযোগী তোমরাই হবে আমরা চাই আমাদের সাথে এবং আমাদেরকে সকল ক্ষেত্রে সহযোগিতা করুন ।তোমাদের মতামত আমাদের জন্য অনুপ্রেরণা।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

আসসালামু আলাইকুম
আপনাদের সকলকে আমাদের রাইটার ফারুকী ওয়েবসাইটের পক্ষ থেকে আন্তরিক মোবারকবাদ ও শুভেচ্ছা ।আমরা বর্তমান আধুনিকতা নামক অশ্লীলতা এবং বেহায়াপনার বিরুদ্ধে ইসলামের পক্ষে কাজ করার সুদূর প্রসারীর চিন্তা ভাবনা এবং অপরিকল্পনা গ্রহণ করেছি ।সাহিত্য চর্চার মাধ্যমে ইসলামের সৌন্দর্যকে মানুষের কাছে ফুটিয়ে তোলা এবং ইসলামের শ্রেষ্ঠত্ব মহত্ব মানব মনে স্থাপন করে দুর্নীতি এবং অপরাধমুক্ত সমাজ গড়ার স্বপ্ন দেখি আমরা ।আমরা বিশ্বাস করি খোলাফায়ে রাশেদিনের চেতনার অনুরূপ চরম এবং তীব্র দায়িত্ব অনুভূতি জাগ্রত করার মাধ্যমে সমাজের নেতৃত্বে যোগ্য ব্যক্তিদের পদার্প সম্ভব। আমরা চাই তোমাদের মত যুব সমাজ আগামী দিনে দেশকে নেতৃত্ব দিয়ে ইসলামের সুমহান বাণীকে পৃথিবীবাসীর কাছে পৌঁছে দেবে। আমাদের সহযোগী তোমরাই হবে আমরা চাই আমাদের সাথে এবং আমাদেরকে সকল ক্ষেত্রে সহযোগিতা করুন ।তোমাদের মতামত আমাদের জন্য অনুপ্রেরণা।

নবীনতর পূর্বতন

আর্টিকেল লিখে টাকা উপার্জন করতে চান? যোগাযোগ:ikramulfahim.tmkm@gmail.com

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

প্রত্যেকটি পোস্ট আপনাকে জানতে সহযোগিতা করবে

নিচের পোস্টে ক্লিক করে বিস্তারিত পড়ুন